সারা দেশের ন্যায় কানাইঘাটে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চলছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব। আর সেই শারদীয় দুর্গোৎসব পরিদর্শনে কানাইঘাট প্রেসক্লাব এর সাংবাদিক গণ। পরিদর্শন কালে জানাযায়, শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী ও নবমী আজ। পঞ্জিকামতে মহাঅষ্টমী ও নবমী আজ। নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন, ষোলো উপাদান আর ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে শুক্রবার সকাল ৭টা ১৬ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমী পরে মহানবমী পূজা শুরু হবে।
চন্ডীপাঠ, ঢাকের বোল, মন্ত্র, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনি, অঞ্জলী, পূষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ সব মিলিয়ে প্রতিটি মন্ডপেই ছিল উৎসবের সমারোহ। সকাল থেকেই বিহিতপূজার মাধ্যমে শুরু হয়েছে মহাঅষ্টমী, মহাঅষ্টমী পূজা পরে মহানবমী পূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সিলেটের পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চণার মাধ্যমে উদযাপিত হচ্ছে মহাঅষ্টমী ও মহানবমী। দেবীর মহাষ্টমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা শুরু হবে।
প্রতি বছর এই পূজাতে কানাইঘাটে নতুন নতুন সাজ-সজ্জা দেখা চোখে পড়ে। সম্প্রীতির এই উপজেলা হিন্দু হিন্দুধর্মালম্বীদের এই পূজাতে সকল ধর্মের মানুষকেই আনন্দ ভাগ করে নিতে দেখা যায়।
নবমী নিশীথে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়। এসব বিবেচনা করে অনেকেই মনে করেন, নবমীর দিন আধ্যাত্মিকতার চেয়েও অনেক বেশি লোকায়ত ভাবনায় ভাবিত থাকে মন। আজ সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে মহাঅষ্টমী ও মহানবমী পূজা এবং আগামী রবিবার সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে পাঁচ দিনের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আবার কেউ কেউ শনিবারে প্রতিমা বিসর্জন করবেন।
সারাদেশসহ সিলেটজুড়ে পালন করা হচ্ছে সনাতনী ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শাস্ত্রমতে অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে দেবীকে চামুণ্ডারূপে পূজা করা হয়।মহিষাসুর নিধনের সময় দেবী দুর্গা প্রচণ্ড ক্রোধে কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছিলেন। অর্থাৎ যিনি চামুণ্ডের বিনাশিনী। পূজার এ মুহূর্তটি আরও একটি কারণে স্মরণীয় কেননা দেবী দুর্গার আশির্বাদ নিয়ে শ্রীরাম এই মুহূর্তটিতেই রাবনকে বধ করেছিলেন।
দেবী দুর্গার কাছে নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেয়া হয় আহুতি। শাস্ত্রমতে ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, নবমী পূজার মাধ্যমে মানবকুল সম্পদ লাভ করে।
সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে স্বর্গালোক থেকে মর্ত্যলোকে আসবেন। দেবী বিদায় নেবেন ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে। এ প্রেক্ষাপটে এবারের দুর্গোৎসব বেশ শুভফল বয়ে আনবে না বাঙালির জীবনে।
এদিকে, দুর্গাপূজায় কানাইঘাটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। নিয়মিত পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, র আনসার-ভিডিপি ও পুলিশ প্রশাসন।এছাড়া পূজাকালীন নিরাপত্তা ও বিভিন্ন বিষয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া কোনো গুজবে কান না দিয়ে যে কোনো প্রয়োজনে কানাইঘাট প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পূজা মণ্ডপ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সাংবাদিক গন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী- এ বছর কানাইঘাটে ৩০টি মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে।